যোগ্য সঙ্গীর অভাবে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ৬১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খেলা থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ দল। দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও লড়াই করে গেছেন মুশফিক।

কিন্তু শেষ দিকে রানের চাপ রীতিমতো বেড়ে যাওয়ায় সেই চাপ উতরে দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়াতে পারেননি মুশফিক। তার একার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে একাই ৭২ রান করেন মুশফিক। ৫৫ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৭২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন জাতীয় দলের এই নির্ভর যোগ্যব্যাটসম্যান।

আগের ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক এক জয় উপহার দেন মুশফিক। বুধবারও ভারতের বিপক্ষে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু যোগ্য সঙ্গীর অভাবে শেষ পর্যন্ত দলকে জয় এনে দিতে পারেননি।

৬১ রানে লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার,তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ দল। কঠিন চাপের মুখে ফেলে দিয়ে ফিরে গেছেন সেরা চার ব্যাটসম্যান। দলকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন মুশফিকু রহিম ও সাব্বির রহমান। জয়ের জন্য শেষ দিকে ২০ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫০ রান।

এমন অবস্থা আউট হয়ে যান সাব্বির। তার বিদায়ের পর মুশফিকের জন্য কাজটি আরও কঠিন হয়ে যায়। মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে অনেক চেষ্টা করেও দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে যেতে পারেনন মুশফিক। ইনিংস শেষ হওয়ার ৪ বল আগে সিরাজের বলে আউট হন মিরাজ।১৭ রানে জয় পায় ভারত। বাংলাদেশকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠে গেছে ভারত।

শুক্রবার বাংলাদেশ দলের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা। সেই ম্যাচে যারা জিততে তারাই ভারতের সঙ্গে ১৮ মার্চের ফাইনালে খেলবে।

ভারতের বিপক্ষে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ১৭৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফিরেছেন লিটন ‍কুমার ও সৌম্য সরকার। ৩.৪ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৩৫ রান জমা করেই ফিরেন লিটন-সৌম্য। আগের ম্যাচে দলকে দারুণ শুরু এনে দেয়া লিটন এদিন ফিরেন মাত্র ৭ রানে।

মাত্র ১২ রানে লিটনের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলটি ছন্দে ফেরার আগেই ফের বিপদে পড়ে যায়। দলকে চাপের মুখে ফেলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল।

দেশসেরা ওপেনার তামিম ১৯ বলে ২৭ রান করলেও ৩ বলে ১ রান করে আউট সৌম্য। মাত্র ২১ রানের ব্যবধানে ফেরেন দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্যাভেলিয়নে ফেরার আগে ৮ বলে ১১ রান করেন রিয়াদ।

ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৭ রান। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৭১ রান করা দলটি শেষ দিকে আরও বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে।

শেষ পর্যন্ত ১৭৬ রান তুলে নেয় রোহিত শর্মার ভারত। দলের হয়ে হয়ে ৮৯ রান করে অপরাজিত থাকেন রোহিত শর্মা। এছাড়া ৪৭ ও ৩৫ রান করেন সুরেশ রায়না ও শেখর ধাওয়ান।

উদ্বোধনীতে শেখর ধাওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানর করার পর দ্বিতীয় উইকেটে সুরেশ রায়নাকে নিয়ে ফের ৯.২ ওভারে ১০২ রানের জুটি গড়েন ভারতীয় অধিনায়ক।

বুধবার সন্ধ্যায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় খেলায় টসে জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শেখর ধাওয়ান।

অনেক চেষ্টা করেও ভারতের উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে পারছিলেন না টাইগাররা। ক্যাচ তুলে দিয়েই নতুন জীবন পান ধাওয়ান। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ভারতীয় উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পেস বোলার রুবেল হোসেন। রুবেলের বলে উইকেট উড়ে যায় শেখ ধাওয়ানের। তার আগে ২৭ বলে ৩৫ রান করে ফিরেন ধাওয়ান।

সাজঘরে ফেরার আগে রোহিত শর্মার সঙ্গে উদ্বোধনীতে ৯.৫ ওভারে ৭০ রানের জুটি গড়েন শেখর ধাওয়ান।অবশ্য ২২ রানেই ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো ধাওয়ানের। সপ্তম ওভারে নাজমুল ইসলাম অপুর বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ তুলে দেন ভারতীয় এই ওপেনার।

অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি লিটন কুমার দাস। নিজেকে হাওয়ায় ভাসিয়েও ক্যাচটি তালুবন্দি করতে না পেরে হতাশাই প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের এ ওপেনার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬ রান (রোহিত ৮৯*, রায়না ৪৭, ধাওয়ান ৩৫)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভরে ১৫৯/৬রান (মুশফিক ৭২*, সাব্বির ২৭, তামিম ২৭; সুন্দর ৩/২২)।

ফল: ভারত ১৭ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা : রোহিত শর্মা (ভারত)।

 


Comments