ঝালকাঠিতে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গৃহবধূর লাঠির আঘাতে শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকালে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাশুড়ি মাজেদা বেগমের (৬৫) মৃত্যু হয়।


অভিযুক্ত গৃহবধূ নাজমিন আক্তার (৩৪) শহরের সিটিপার্ক এলাকার আব্দুস ছত্তার হোসেনের মেয়ে।মঙ্গলবার বিকালে ঝালকাঠি সদর হাসপতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।এর আগে ১২ মার্চ সদর উপজেলার দক্ষিণ পিপলিতা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্বজনরা জানায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার দক্ষিণ পিপলিতা গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে ১৭ বছর আগে শহরের সিটিপার্ক এলাকার আব্দুস ছত্তার হোসেনের মেয়ে নাজমিন আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের কারণে ১১ মার্চ বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বিবাহবিচ্ছেদের কারণে নাজমিন আক্তার ও তার আত্মীয়স্বজন মাহফুজ ও তার পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়।

পরের দিনদুপুরে নাজমিন আক্তার, তার ভাই সোহাগ হোসেন, বোন নাছিমা বেগম ও মাকসুদা বেগম লোকজন নিয়ে মাহফুজের বাড়িতে যায়।

তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। মাহফুজের মা মাজেদা বেগম ঘর থেকে বের হয়ে তাদের থামতে বলেন। এতে উত্তেজিত হয়ে সাবেক পুত্রবধূ শাশুড়ি মাজেদা বেগমের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।

পুত্রবধূর সহযোগীরাও তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। মাকে বাঁচাতে এসে সাবেক স্ত্রী ও তার স্বজনদের লাঠিসোঁটার আঘাতে আহত হন মাহফুজুর রহমান।

গুরুতর অবস্থায় মাজেদা বেগমকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে সোমবার বিকালে মাজেদা বেগমের মৃত্যু হয়।

নিহতের ছেলে মাসুদুর রহমান বলেন, হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ১৬ মার্চ আমি বাদী হয়ে আমার ভাইয়ের সাবেক স্ত্রীসহ ছয়জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছিলাম।

এখন আমার মা মারা গেছেন, ময়নাতদন্তও হয়েছে। মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি। আমি মায়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এসআই মো. আশিকুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্ত শুরু করেছিলাম। ইতিমধ্যে আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

এখন মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের জন্য ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আবেদন করা হবে। আদালত অনুমতি দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 


Comments