স্থানীয় এমপিকে অতিথি না করায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নির্বাচন সংক্রান্ত লাইভ অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সোমবার দুপুরে শরীয়তপুরের ডামুড্যায় পূর্ব মাদারীপুর কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা অনুষ্ঠানে আসা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আসলামসহ অনুষ্ঠান দেখতে আসা বিএনপির আট নেতাকর্মীকে লাঞ্ছিত করে।

ডামুড্যা থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভির একটি সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠান হচ্ছিল ডামুড্যা উপজেলা সদরের পূর্ব মাদারীপুর কলেজ মাঠে।

সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহম্মেদ আসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সাত জন প্রতিনিধি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এমন সময় সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবলু সিকদার। তিনি ওই বেসরকারি টিভির সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান তাকে সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কেন অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয়নি। তখন তাকে অতিথি করে অনুষ্ঠানে যুক্ত করা হয়।

পরে অনুষ্ঠান চলার সময় ডামুড্যা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারী তার সঙ্গীদের নিয়ে অতিথিদের গালাগালি করে চেয়ার থেকে উঠিয়ে দেন। তিনি বিএনপি নেতা সাঈদ আসলামকে লাঞ্ছিত করেন।

তার সঙ্গে থাকা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাদাৎ হোসেন, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাসেম বেপারী, পৌরসভা যুবদলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ শামছুল আরেফিন, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম, অরবিল বেপারী ও নাজমুল হককেও লাঞ্ছিত করা হয়।

সাঈদ আহম্মেদ আসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠান চলার সময় আমার ওপর হামলা করেছে। আমার নেতাকর্মীদের মারধর করেছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবলু সিকদার বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয় নিয়ে একটি টেলিভিশন লাইভ অনুষ্ঠান করছিল। সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনও নেতাকে রাখেনি। আমাদের অনুমতিও নেয়নি। তাই দলীয় নেতা কর্মীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে এমন আচরণ করেছে।’

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল মাদবর বলেন, ‘আমাদের নেতা নাহিম রাজ্জাককে বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান করা হচ্ছিল। নেতাকে বাদ দিয়ে ডামুড্যায় কোনও অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না। আর বিএনপি এখানে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছে। আমরা কাউকে মারধর করিনি।’

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের স্থানীয় সমন্বয়কারী সাংবাদিক কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘স্থানীয় এমপি নাহিম রাজ্জাক সকালে ঢাকা থেকে এসে অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। গত রাতেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি। অথচ, অতি উৎসাহী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের লাঞ্ছিত করে।’

ডামুড্যা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া নিয়ে নেতাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’

আরও পড়ুন- খালেদা জিয়ার মুক্তির ওপর নির্ভর করছে বিএনপি’র নির্বাচন: নজরুল ইসলাম খান

 


Comments