আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় নাইজেরিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। একই গ্রুপের অন্য দুই দল ক্রোয়েশিয়া এবং আইসল্যান্ডও মুখোমুখি হবে একই সময়ে।

স্বাভাবিকভাবেই দুটি ম্যাচেই পছন্দের দল থাকলে দর্শকদের পড়তে হচ্ছে সমস্যায়। একটা খেলা মিস হয়ে যাচ্ছে।

অথবা টিভিতে দুটো চ্যানেল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক বার এই ম্যাচ, এক বার ওই ম্যাচ দেখার বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা।

কিন্তু বিশ্বকাপের আসরে গ্রুপ স্টেজের শেষ ম্যাচগুলো কেন একই সময়ে দিল ফিফা? এর জবাব খুঁজতে পিছিয়ে যেতে হবে ৩৬ বছর আগের একটি ঘটনায়।

১৯৮২ বিশ্বকাপে স্পেনের গিজোর সেই ঘটনা কুখ্যাতি পেয়েছিল। ওই বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছিল আলজেরিয়ার। প্রথম ম্যাচে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করেছিল আলজেরিয়া। ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল জার্মানদের।

দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রিয়ার কাছে হারলেও, শেষ ম্যাচে চিলিকে হারিয়ে দেয় তারা। গ্রুপের শেষ ম্যাচ ছিল পশ্চিম জার্মানি আর অস্ট্রিয়ার মধ্যে। ম্যাচটি ড্র হলে বা অস্ট্রিয়া জিতলে পরের রাউন্ডে উঠে যেত অস্ট্রিয়া আর আলজেরিয়া। পশ্চিম জার্মানি ছিটকে যেত।

আর পশ্চিম জার্মানি জিতলে চিলি বাদে বাকি তিনটে দলের পয়েন্ট হয়ে যেত ৪ করে। সেই ম্যাচই বদলে দিয়েছিল পরবর্তী বিশ্বকাপগুলোর গ্রুপ পর্বের সূচি তৈরির সব নিয়মকানুন।

হিসাবটা ছিল এরকম- পশ্চিম জার্মানি বেশি গোলে জিতলে অস্ট্রিয়ার বদলে পরের রাউন্ডে চলে যেত আলজেরিয়া। গ্রুপের সেই শেষ ম্যাচে ফিক্সিং হয়েছিল বলে মনে করেন অনেকেই।

পশ্চিম জার্মানি ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথাতেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। বাকি ম্যাচে দুই দল নিজেদের মধ্যে শুধু বল পাস করেই সময় কাটিয়ে দেয়। কেউ কারও গোলমুখে আক্রমণ চালায়নি! ফলে আলজেরিয়া ছিটকে যায় এবং পশ্চিম জার্মানি ও অস্ট্রিয়া নক-আউটে পৌঁছে যায়।

সেই ম্যাচে একটা সময় ধারাভাষ্যকাররাও ধারাভাষ্য দেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। যারা টিভিতে খেলা দেখছিলেন তাদের টিভি বন্ধ করে দিতে বলেছিলেন তারা! এই ঘটনার পর ফিফার কাছে তদন্তের দাবি জানায় আলজেরিয়া। তদন্তের সময় পশ্চিম জার্মানি ও অস্ট্রিয়া দুদলই অভিযোগ অস্বীকার করে।

ব্যাপারটা আর বেশি দূর না গড়ালেও বদলে দিয়েছিল পরবর্তী বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগের সূচির ধরন। ফিক্সিংয়ের সুযোগ বন্ধ করতে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ থেকে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচগুলো একই সময়ে আয়োজন শুরু হয়।

 


Comments