শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সাধুর বাজার লঞ্চঘাটে আকস্মিক পদ্মা নদীর ভাঙনে ৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে তিনটি দোকানঘরসহ শতাধিক লোক পানিতে তলিয়ে যায়।

মিঠু মাঝি নামে স্থানীয় এক যুবক ফেসবুক লাইভে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানান, শতাধিক লোক বাজারটিতে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিল। তাদের নিয়েই বাজারটি হঠাৎ নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। সাতঁরে ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অনেকেই আহত অবস্থায় উদ্ধার হলেও এখনও প্রায় ২০ জনের মত নিখোঁখ আছে।

স্থানীয়রা আহত অবস্থায় ২০ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে নদীভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিক নিয়ে সাধুরবাজার লঞ্চঘাট এলাকার নদী তীরবর্তী দোকান সরানো কাজ শুরু করেন দোকান মালিকরা। এক পর্যায়ে হঠাৎ প্রায় ৫০ মিটার এলাকা ধসে পড়ে।

এতে তিনটি দোকান, দুইটি ট্রলি, সিমেন্টভর্তি একটি মাহিন্দ্রসহ ৩০ জন নদীতে পড়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় ২০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও নিখোঁজ রয়েছে বেশ কয়েকজন।

নিখোঁজ রিকশাচালক শাহজাহান বেপারীর ছেলে নুরুজ্জামান বেপারী বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার বাবা একটি দোকান সরানোর কাজ করছিলেন। এখনও তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। নদীতে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।’

কেদারপুর এলাকার গুপি বাছারের স্ত্রী পারবতি রানি জানান, তার স্বামীর চায়ের দোকান আছে। ভাঙনে তিনি নদীতে তলিয়ে গেছেন। দ্রুত স্বামীকে উদ্ধারের আকুতি জানান তিনি।

চাকধ গ্রামে নিখোঁজ নাছির হাওলাদারের স্ত্রী শিরিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী একজন কাঠমিস্ত্রি। তিনি দোকান সরাতে কাজ করছিলেন। তিনি এখনও নিখোঁজ। আমরা তার সন্ধান চাই।

শরীযতপুরের সিভিল সার্জন ডা. খলিলুর রহমান  বলেন, আমরা এ পর্যন্ত নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়েছি। যাদের অবস্থা গুরুতর তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতাল ও একজনকে ঢাকায় পাঠিয়েছি।

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিভেন্সের উপসহকারী পরিচালক নিয়াজ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কাজে যোগ দিই। নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। ফরিদপুর থেকে একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে আসছে।’

নড়িয়া উপজেলার লোকজন আকস্মিক এই ঘটনায় শোকে স্তব্ধ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নদীতে ভাঙন প্রতিরোধ বাঁধ না দেওয়ায় এলাকাবাসী তাদের প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে ।

 


Comments